[t4b-ticker]
দক্ষিণ সুরমার অপরাধীদের শেল্টারদাতা আইসি আবুল হোসেনের খুঁটির জোর কোথায় ?

অপরাধ প্রতিবেদক:

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানা। এ যেন বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপ। যেখানে হাত বাড়ালেই মিলে বিভিন্ন প্রকারের মানব ক্ষতিকারক মাদক দ্রব্য।  সেখানে দেদারসে চলে জুয়ার রমরমা বাণিজ্য এবং আবাসিক হোটেল গুলোতে চলে মানব পাচার ও পতিতাবৃত্তি। প্রকাশ্যে দিবালোকে এমন অপরাধ চললেও থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় জনমনে নানা প্রশ ঘুরপাক খাচ্ছে !

নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং  খোঁজ নিয়ে জানা যায়- মাদক দ্রব্য, জুয়া, মানবপাচার, পতিতাবৃত্তি সবই চলে আইসি আবুল হোসেনের ইশারায়। যার কারণে বন্ধ হচ্ছেনা দক্ষিণ সুরমার অপরাধ প্রবনণতা। ফলে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস দিনের পর দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি ডিবি পুলিশের সাড়াশি অভিযানে সিলেটে জুয়ারীদের আস্তানা তছনছ হলেও এখনো বহাল রয়েছে দক্ষিন সুরমার জিঞ্জিরশাহ মাজার সংলগ্ন কাশেমের আস্তানা, কীনব্রিজের নীচে মানিকের আস্তানা, মার্কাস পয়েন্টের লাকসামী ফারুকের আস্তানা, নতুন রেলস্টেশন সংলগ্ন নজরুলের আস্তানা, চাদঁনীঘাট মাছ বাজার আস্তানা, কুচাইয়ের হায়দারের কলোনীর আস্তানা, পুরাতন রেলস্টেশন মেডিকেলের পাশে ও মন্দির সংলগ্ন জামালের আস্তানা।

এদিকে, বন্ধ আছে বাঁশপালা মার্কেটে অন্তরের আস্তানা, ফেরিঘাটে হারুনের আস্তানা, বালুর মাঠের বাচনের জুয়া ও মাদকের আস্তানা।

সংশ্লিষ্ট আরেকটি সূত্র জানায়, দক্ষিন সুরমার ব্যাটারী মার্কেটে তিনতাস নামক জুয়া চালায় তাহের, আকাশ, চুন্নু, জামালসহ প্রায় ৩০ জনের একটি সিন্ডিকেট। এসব জুয়ার আস্তানা থেকে আইসি আবুল হোসেন দৈনিক, সাপ্তাহিক ভিত্তিতে বড় অংকের বখরা আদায় করেন। যে কারণে পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান পরিচালনা করে না।

 

স্থানীয় ও ডিবি সুত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিলেট মহানগর এলাকার সকল জুয়ার আস্তানায় ডিবি পুলিশ সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে সকল জুয়ার বোর্ড বন্ধ  করে দিয়েছে।

 

ডিবি পুলিশের এমন কর্মকান্ডে দক্ষিণ সুরমার সচেতন মহল সন্তোষ প্রকাশ করে প্রশংসা করলেও অস্বস্থি প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ সুরমা কদমতলী ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল হোসেনের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে। তারা বলেন দক্ষিণ সুরমার অপরাধীদের রক্ষাকর্তা হচ্ছেন কদমতলী ফাঁড়ির আইসি আবুল।

 

কিছুদিন আগে তালাশ টিভি ডট লাইভ, সাপ্তাহিক হলি সিলেট সহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সন,  প্রিন্টে জুয়ারীদের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণ সুরমার এবং বেশ আগে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার  জুয়ার আস্তানা নিয়ে ধারাবাহিক  প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপরেই নড়েছড়ে বসে মহানগর পুলিশ প্রশাসন।

এর পর থেকে দক্ষিণ ও উত্তর সুরমার বিভিন্ন জুয়ার আস্তানায় মহানগর ডিবি পুলিশের বিশেষ নজরদারী বৃদ্ধি করলে জুয়ারীদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। তাই জুয়ারীরা পুনরায় সংগঠিত হয়ে জুয়ার বোর্ড চালাতে হিমশিম খায়। এভাবে ১৫দিন বন্ধ থাকার পর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী ফাঁড়ির আইসিকে ম্যানেজ করে আবারও শুরু হয় দক্ষিণ সুরমায় জুয়ার জমজমাট বেপরোয়া প্রতারণা।

 

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে উত্তর ও দক্ষিন সুরমার সকল জুয়ার আস্তানায় ডিবি পুলিশের সাড়াশি অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে তছনছ করা হয়েছে। এ থেকে বাদ যায়নি শীর্ষ জুয়ারী হারুন-কাশেমের আস্তানাও।

 

তাদের আস্তানা থেকেও অনেক সাধারণ জুয়ারীকে আটক করে থানায় মামলা দিয়ে হস্তান্তরের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ডিবির সেই সাঁড়াশি  অভিযানে নীরিহ খেটে খাওয়া সাধারন জুয়ারীর পাশাপাশি আটক করা হয় ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাওয়া শীর্ষ জুয়ারী ও বোর্ড মালিক হারুন, নজরুল, কাশেমের মেয়ে জেসমিন, বেবী ও ছেলে আজাদকে।

দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন জুয়ার আস্তানা ঘুরে দেখা যায়, জুয়ারীদের আনাগোনা নেই বল্লেই চলে। এ সময় পথচারীদের কাছে জুয়ার আসর সম্পর্কে জানতে চাইলে, তারা এই প্রতিনিধিকে বলেন ডিবি পুলিশের অভিযানের পর আর জুয়ার আসর বসেনি, সবাই ভয় পাচ্ছে। কিন্তু কদমতলী ফাড়িঁর আইসির সহযোগিতায় আবারও দক্ষিণ সুরমার শীর্ষ জুয়ারী আবুল কাশেম, মানিক, লাকসামী ফারুক, নজরুল, শিপলু, পুরাতন রেলওয়ে হাসপাতাল ও মন্দির, চাদঁনীঘাট মাছ বাজার, হায়দারের কলোনীর আস্তানা অবৈধ জুয়ার প্রতারণা চলছে।

স্থানীয়রা জানান, আবুল কাশেমসহ জুুয়ারীরা কদমতলী ফাড়িঁকে ম্যানেজ করেই তাদের আস্তানা গুলোতে আবারও দেদারছে জুয়ার প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই থানা পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

 

সাধারন মানুষের প্রশ্ন ? সকল জুয়ার আস্তানা বন্ধ হলেও অদৃশ্য কারণে কাশেমসহ সক্রিয় অন্যান্য আস্তানা বন্ধ হয়না। কারণ তাদের শেল্টারদাতা আইসি আবুল হোসেন।সচেতন মহলের প্রশ্ন দক্ষিন সুরমা ফাঁড়ির আইসি আবুল হোসেনের খুঁটির জোর কোথায় ? এ নিয়ে আগামী পর্বে থাকবে দক্ষিণ সুরমার মাদক ও আবাসিক হোটেলের অপকর্ম নিয়ে বিশদ প্রতিবেদন। (চলবে)

রিপোর্ট: সু সেন