[t4b-ticker]

অনলাইন ডেস্কঃ

ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে সমালোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

রবিবার (৩০ জুন) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আদালতে এ আবেদন করেন। এসময় তিনি নিজে আদালতে হাজির থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন। আগামী ২৭ জুলাই এই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। মতিউর রহমান, লায়লা কানিজ, তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ জন্য ২৪ জুন তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।

তিনি আরো জানান, লায়লা কানিজ আদালতে হাজির হয়ে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার করতে আবেদন করেন। তবে দুদকের পক্ষ থেকে এই আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন। আদালতকে তিনি বলেন, লায়লা কানিজ ও তার স্বামী মতিউরের বিরুদ্ধে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো আইনি সুযোগ নেই। পরে আদালত শুনানির জন্য ২৭ জুলাই নতুন দিন ঠিক করেন।

ছাগলকাণ্ডের পর মতিউরের নামে-বেনামে শতশত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য সামনে এসেছে। এছাড়া মতিউরের সন্তানদের বিলাসবহুল গাড়িও, পাখি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ৪ জুনের কমিশন সভায় মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পঞ্চম বারের মতো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একজন উপ-পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধানী টিম গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সদস্যরা কাজও শুরু করেছেন।

এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১৮ বছরের ব্যবধানে ২০০৪, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০২১ সালে মোট চারবার অনুসন্ধান করে দুদক। তবে নথিভুক্তির মাধ্যমে এসব অনুসন্ধানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করে দুদক। অর্থাৎ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে মতিউর রহমানকে নিয়ে কমিশনের অনুসন্ধান ও পরবর্তী কার্যক্রম থেমে যায়।

১৯৯৬ ও ১৯৯৭ এই দুই বছর বেনাপোল বন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার ছিলেন মতিউর রহমান। সে সময়ই তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া ঘুস নেয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগ আছে, দুই বছর দায়িত্ব পালনকালে বেনাপোল বন্দর থেকেই তিনি অঢেল টাকা কামিয়েছিলেন। দেশে-বিদেশে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ করেছেন এই কর্মকর্তা। এসব সম্পদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক তার বিরুদ্ধে প্রথম অনুসন্ধান টিম গঠন করে ২০০০ সালের দিকে। তখন দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান ঝুলিয়ে রেখে ২০০৪ সালে অভিযোগ পরিসমাপ্তি করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলাকালে দীর্ঘ ১৪ দিন পর ২৭ জুন জনসমক্ষে আসেন মতিউর রহমানের স্ত্রী ও রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ। সেদিন বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে দুটি সভায় অংশ নেন তিনি।