[t4b-ticker]
ভাইরাসের মতো অপরাধ গ্রাস করছে সিলেটের যুব-সম্প্রদায়কে !

বিশেষ প্রতিনিধি ::

বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সিলেট মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের পর দিন  বেড়েই চলেছে । ভাইরাসের মতো এই অপরাধ এখন যুব-সম্প্রদায়কে গ্রাস করতে যাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। একের পর ঘটে চলছে মারামারি, হামলা ও রক্তাক্ত জখম করার মতো ঘটনাসহ বহু অপ্রীতিকর ঘটনা। আর এসব ঘটনাগুলো ঘটছে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, কিংবা পূর্ব শত্রুতার জেরে। এদের বিরুদ্ধে পুলিশী অভিযান না থাকায় নগরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে আত্মপ্রকাশ করা এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই, মাদক পাচার, অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডের মতো নানা অপরাধে জড়িত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কিশোর গ্যাংদেরকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদদ জোগাচ্ছেন স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা–কর্মী। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদের বিরুদ্ধে প্রদক্ষেপ নিলেও, তা খুব একটা কাজে আসছে না। এই কিশোর গ্যাংয়ের দাপটে নগরীর একাধিক হোটেলে চলছে অসমাজিকতা ও একাধিক জুয়ার আসর গড়ে ওঠেছে।

নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা সুরমা মার্কেটের সামন দিয়ে ভিআইপিসহ সকল শ্রেণী পেশার কর্মকর্তা যাতায়াত করেন। সেই সুরমা মার্কেটে গড়ে উঠেছে সুন্দর আলীর মেঘনা নামক বিশাল পতিতালয়। মাঝে-মধ্যে মহানগরের গোয়েন্ধা পুলিশের সদস্যরা সেখানে অভিযান চালালে শত শত লোক রাস্তায় দাড়িয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন এবং মজা নেন। এমনকি মেয়েরা বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলার উপর দিয়ে দৌড়া-দৌড়ি করেন তখন মানুষজন স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। অভিযানে দুই একজন আটক হলেও সাথে সাথে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। কিন্ত মূলহোতা সুন্দর আলী রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাহিরে। যার ফলে শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় তার অসমাজিকতার ব্যবসা।

এদিকে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা কালিঘাটের গড়ে উঠেছে শরীফের বিশাল জুয়ার আসর। সেই আসরে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে জামাল নামের এক যুবক। তাদের এই আসরে দৈনিক লাখ লাখ টাকার জুয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক করণে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও থানা পুলিশের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। এই জুয়ার বোর্ড থেকে সর্বস্ব হারিয়ে ছিনতাইয়ে যোগ দেন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

পতিতাবৃত্তি ও জুয়ার ফলেই নগরীতে অপরাধীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বন্দরবাজার এলাকার রংমহল টাওয়ারের সামনে বেসরকারি একটি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। ৩ ছিনতাইকারী ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই কর্মকর্তার মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং জরুরি কার্ড ও কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

ছিনতাইয়ের শিকার সাজিদুল হক সাব্বির জানান, তাঁর বাড়ি বরিশাল। তিনি বেসরকারি একটি এয়ারলাইন্সের সিলেট অফিসে কর্মরত এবং এয়ারপোর্ট এলাকা একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। বাড়িতে ছুটিতে গিয়েছিলেন। ছুটি কাটিয়ে সোমবার রাতে বাসযোগে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। মঙ্গলবার ভোরে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নেমে রিকশা করে বন্দরবাজার আসার পথে সাড়ে ৫টার দিকে রংমহল টাওয়ারের অদূরে ৩ ছিনতাইকারী সাব্বিরের রিকশার পথ রোধ করে ধারালো অস্ত্র ধরে মোবাইল ফোন, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং মানিব্যাগে থাকা এটিএম কার্ড ও জরুরি কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়।

সাব্বির বলেন- জরুরি ব্যস্ততায় মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি, আজ বুধবার ২১ ফেব্রুয়ারি করবেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন- লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংগৃহিত তথ্য সূত্র