[t4b-ticker]
সিলেটে আ.লীগকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করতে চান মিসবাহ

সিলেটর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবার মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। এরইমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সিলেট-১ ও ৩ আসন থেকে সংগ্রহ করেছেন দলীয় মনোনয়নপত্র। সুযোগ পেলে সিলেটে আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেছেন তিনি।

স্থানীয় নেতারা বলছেন, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে এরইমধ্যে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তিনবারের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। দলের সর্বশেষ কাউন্সিলে পদ না পেলেও আকড়ে আছেন দলীয় আদর্শ। পাশাপাশি নিজের এলাকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রয়েছেন।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ১৯৭৫ সা‌লের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমান‌কে সপরিবারে হত্যার পর সিলেটে প্রথম প্রতিবাদকারীদের একজন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। এজন্য দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয়েছে তাকে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় হামলা-মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন তিনি। এরপরও দলের প্রয়োজনে মাঠে আছেন।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ কালবেলাকে বলেন, আজীবন দলের নির্দেশ মেনে কাজ করেছেন। সিলেটের আনাচে কানাচে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ এবং নৌকার আদর্শ ছড়িয়ে দিতে মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে আজীবন থাকবো।

তিনি বলেন, এবার আমি সিলেট-১ এবং ৩ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। দল থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছি। তা পেলে সাধারণ মানুষকে নিয়ে সিলেটে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাব।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ১৯৭৭ সালে ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। মদন মোহন (এমসি) কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, পরে সভাপতিও হন। ১৯৮১ সালে বৃহত্তর সিলেটের চার জেলার সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আর ১৯৮৩ সালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হন তিনি।

ছাত্র রাজনীতির পর তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে মূল দলের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দুদফা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এ নেতা। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি টানা তিনবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় নেতারা বলছেন, ছাত্রজীবন থেকে বর্ণ্যাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে শত বাঁধা পেরিয়েছেন মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ। বঙ্গবন্ধুর খুনি মুশতাক থেকে শুরু করে বিএনপি-জামায়াতের আমলে বারবার পেয়েছেন মৃত্যু হুমকি। তবুও আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও আন্দোলন থেকে তাকে সরানো যায়নি তাকে। ১৯৮৪ সালে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভা করতে যান বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক। সেই সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোশতাকে গণপিটুনি দেয়। এতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘ ১৭ মাস কারাভোগ করেন মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ।

স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে টানা ৪৩ দিন আটক অবস্থায় থাকেন। ওই সময়ে তিনি চরম নির্যাতনের শিকার হন। ওয়ান-ইলেভেনে অনেক চাপের মধ্যেও দলের হয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন তিনি। সেনাসমর্থিত সরকারের সময়েও যৌথবাহিনীর নির্যাতন-প্রলোভনেও পিছু হটেননি।

আওয়ামী লীগের প্রগতিশীল রাজনীতি করার কারণে জঙ্গি হামলার শিকারও হন তিনি। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ ২০০৪ সালের ৭ আগষ্ট সিলেটের গুলশান সেন্টারে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় আহত হন।