[t4b-ticker]

অনলাইন ডেস্কঃ

 

শিক্ষার্থী আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিনের (১৮ জুলাই- বৃহস্পতিবার) সকালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ টিম ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি)। 

 

 

 

 

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা ও মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এসময় শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিচ্ছে তারা।

 

 

 

দুই সপ্তাহ ধরে সিলেটসহ সারা দেশে চলছে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী আন্দোলন। প্রথমে আন্দোলন অহিংস থাকলেও রবিবার (১৪ জুলাই) রাত থেকে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠে  সিলেট।

 

 

 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ৬ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। বুধবার (১৭) জুলাই দিনভর  সিলেট ছিল উত্তাল। এছাড়া ঢাকাসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরেও পুলিশের সঙ্গে সাধারণ ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাট-ডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

 

 

 

বুধবার পৌনে ৮টায় শিক্ষার্থী আন্দোলনের ঢাকার সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পোস্টে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। এছাড়া রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহন চলবে না।

 

 

 

বিবৃতিতে বলা হয়, “শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট  শাটডাউন’ ঘোষণা করছি।”

 

 

 

দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে কর্মসূচি সফল করতে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, “শুধুমাত্র হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারা দেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি সফল করুন।”

 

 

 

এ বিষয়ে  সিলেটের আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বুধবার রাতে  বলেন- বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় অবস্থান নিবো। জরুরি সেবা ছাড়া আর সব বন্ধ থাকবে। আশা করছি-  সিলেটের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষও আমাদের সঙ্গে থাকবেন। এটা অধিকার আদায়ের আন্দোলন, সবাই অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন।

 

 

 

তিনি জানান- কর্মসূচি বাস্তবায়নে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা শুরুতে মেয়েদের হল গুলো পুরোপুরি নিরাপদ করতে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের গোল চত্বরে একত্রিত হয়ে মেয়েদের হল ঘুরে এসে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এবং কন্ট্রোলার ভবনে তালা মেরে বেলা ১১টায় ভার্সিটি গেইটে অবস্থান নিবে এবং দিনভর মাঠে থাকবে।

 

 

 

কিন্তু এসব কর্মসূচি শুরু করার আগেই সকাল ৮টা থেকে শাবি ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

 

 

 

আসাদুল্লাহ আল গালিব বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা দিকে  বলেন- পুলিশের ভয়ে কিছু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী হল ছেড়েছে। তবে বেশিরভাগই হলে রয়ে গেছেন। পুলিশ চাপ দিচ্ছে হল ছাড়তে। কিন্তু যাই ঘটে যাক আমরা হল ছাড়বো না। আর যারা বের হয়েছে তারাও পুরোপুরি চলে যায়নি, আশপাশেই আছে। কর্মসূচি শুরু হলে তারা এসে আমাদের সঙ্গে যোগদান করবে।

 

 

 

এর আগে সারা দেশে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মঙ্গলবার রাতে দেশের সব পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া বুধবার দুপুরে- বিকাল ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় শাবি প্রশাসন। কিন্তু এসব নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোরনকারী শিক্ষার্থীরা হলে থেকে যায় এবং বুধবার দিনভর নানা কর্মসূচি পালন করে।

 

(AR)