[t4b-ticker]
কিসিঞ্জারে গুডবাই, হাসের নিউ ইনিংস

অনলাইন ডেস্ক:

পাক্কা শতায়ুতে মৃত্যুর স্বাদ নিতে হয়েছে সাবেক বহুল আলোচিত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জারকে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন কিসিঞ্জার। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা বিতর্কিত মন্তব্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নামটি। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে এ প্রসঙ্গটি উঠেছিল। জাপানে নিযুক্ত তখনকার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সিস জনসন বহুল আলোচিত ওই মন্তব্যটি করলে তাতে সম্মতি দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার। কিন্তু বক্তব্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে কিসিঞ্জারের নামে। পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতায় নীরব থাকা, কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন করায় ব্যাপক সমালোচিত তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মার্কিন কূটনীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে।

কিসিঞ্জার শেষ কাজটি করে দিয়ে গেছেন পর্দার আড়ালে থেকে চীনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক পুনরায় জোড়া লাগিয়ে। ১৯৭১ সালে তিনিই চীনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে পিকিং সফর করেছিলেন অতি গোপনীয়তায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট নিক্সন চীন যান ও মাও সে তুংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন, সূচনা হয় নতুন কূটনৈতিক তৎপরতার। মৃত্যুর খবরের পর কিসিঞ্জারকে নিয়ে একটি সাইড রিপোর্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রগতিশীল সংবাদ ওয়েবসাইট হাফপোস্ট। এতে উঠে এসেছে ১৯৭১ সালে দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনীতিক আর্চার ব্লাডকে ঢাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা। শিরোনাম করা হয়েছে ‘তুখোড়’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, না কুখ্যাত ‘যুদ্ধাপরাধী’। মার্কিন কূটনীতিক আর্চার ব্লাড ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল। বাংলাদেশে পাকিস্তানি নৃশংসতার বিবরণ দিয়ে তিনি ওয়াশিংটনে কূটনীতিক বার্তা পাঠিয়েছিলেন। আর্চার ব্লাড কূটনীতিক বার্তায় বলেছিলেন, পাকিস্তান ভিটেমাটি ছাড়া করে, গুলি করে পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশিদের নির্মূল করছে। এক মাস পর আর্চার ব্লাড ওয়াশিংটনে আরেকটি টেলিগ্রাম পাঠান। এতে পূর্ব পাকিস্তানে সহিংস দমনপীড়নের নিন্দা জানানো বা সহিংস দমনপীড়ন নিয়ন্ত্রণ চেষ্টায় অস্বীকৃতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রদর্শনের অভিযোগ আনেন তিনি। টেলিগ্রামে আর্চার ব্লাড বলেন, ‘গণতন্ত্র দমনের বিষয়ে আমাদের সরকার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সরকার নৃশংসতার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।’

পাকিস্তান নিয়ে এমন মেমো পাঠানোর অল্প সময়ের মাথায় আর্চার ব্লাডকে ঢাকা থেকে ওয়াশিংটনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তাকে ওয়াশিংটনে অন্য একটি কূটনৈতিক পদে দায়িত্ব দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার। হাফপোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির একসময়কার প্রতাপশালী ব্যক্তি কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল। কিন্তু তিনি তার সিদ্ধান্তের জন্য কখনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন, ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার রক্তক্ষয়ী অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক নৃশংসতার বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখা—এসব অভিযোগ রয়েছে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে। তবে বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ-সংঘাতের ‘কারিগর’ বলা হলেও সেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে।

বিশ্ব কূটনীতির বাঁকে পড়ে নানা পথপরিক্রমায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়ন হয়েছে। কখনো কখনো অবনতিও হয়েছে। হাল সময়টায় আবার চরম বৈরী। সম্পর্কের দোলাচল। প্রকৃতিতে শীত শুরু হয়েছে। ২০ ঘণ্টা জার্নি করে আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার মৌসুমও এসে যাচ্ছে। রাজপথের টক-ঝাল-মিঠা আন্দোলন, যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন-ভিসা নীতি মিলিয়ে এক ভিন্নতর পরিস্থিতি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘটনাপ্রবাহে আলোচিত নাম রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। কিসিঞ্জার আর হাসের পর্যায় এক নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর রাষ্ট্রদূত, গুরুত্ব-দূরত্বে বিস্তর ফাঁক। বাংলাদেশ অঞ্চলে হাসের কর্মতৎপরতা আর যুক্তরাষ্ট্রে কিসিঞ্জারের প্রয়াণের মধ্যে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। তারপরও পরিস্থিতি ও ঘটনাচক্রে প্রাসঙ্গিক।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে বছরখানেক ধরে নানা জল্পনা। ব্যস্ততাও অন্তহীন। নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগপর্যন্ত সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে যারপরনাই খাটাখাটুনি করে চলে যান শ্রীলঙ্কায় অবকাশে। যাওয়া মানে চলে যাওয়া নয়। ওই সময়টায় তাকে নিয়ে গুজব-গুঞ্জনের হাট বসে। মিশন ফেল, ওয়াশিংটনে তলব, প্রত্যাহার ইত্যাদি কথাও রটেছে। শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরেছেন সপ্তাহ দেড়েক পর। ঢাকা ফেরার দু-তিন দিন কোথাও মুভ করেননি। তবে অকার্যকর ছিলেন বলে তথ্য নেই। তার আনুষ্ঠানিক তৎপরতা ঘটে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। সেখানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঘণ্টাখানেক। তবে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব কিংবা পিটার হাস কেউ কিছু বলেননি। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের চলমান উন্নয়ন নিয়ে নিয়মিত রুটিন বৈঠক। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন, শ্রম অধিকার নীতি, মানবাধিকারসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। এর মধ্যে নতুন করে আলোচনায় শ্রম অধিকার নীতি।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সরকারকে সতর্ক করেছে। ওয়াশিংটনে দেশটির মিশনকে সতর্ক করে দিয়ে বলছে, শ্রম অধিকারসংক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডামে হুমকিস্বরূপ নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা এবং ভিসা সীমাবদ্ধতার মতো কঠোর পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ অন্যতম ‘লক্ষ্য’ হতে পারে। শ্রম-অধিকারের এ আদেশটি বিশ্বব্যাপী প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশ বিশেষ টার্গেটে। বেশি বেতনের দাবিতে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষের সপ্তাহ এবং পরবর্তী সময়ে পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষের ফলে কমপক্ষে চারজন শ্রমিক নিহত হওয়ায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে বিষয়টি উত্থাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে। মিশনটি মনে করে, নভেম্বরের মাঝামাঝি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া স্মারকলিপি বাংলাদেশকেও স্পর্শ করতে পারে, এটি সম্ভাব্য পদক্ষেপের একটি ‘সংকেত’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে, দূতাবাস উল্লেখ করেছে—স্মারকলিপির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের শ্রম সমস্যাগুলো নিয়ে সেক্রেটারি অব স্টেট এবং শ্রম সচিব জোরালোভাবে বক্তব্য রাখেন’। কূটনৈতিক মিশন আগে থেকেই সতর্ক করেছিল যে, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে যে কোনো সম্ভাব্য পরিণতি এড়াতে সরকারের উচিত মেমোরেন্ডামটি আমলে নেওয়া। কূটনৈতিক নোটে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, স্মারকলিপি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্র পিছু ছাড়ছে না, পিটার হাস দমছেন না—এ চিঠিসহ আরও কিছু নমুনা ঘুরছে। আছে ফোঁসফাঁসও। স্মারকলিপির বিশদ বিবরণে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, শ্রমিক-ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক-অধিকারকর্মী এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোকে হুমকি, ভয় দেখানো বা আক্রমণকারী ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ব্লিঙ্কেন কল্পনা আক্তারের উদাহরণ তুলে ধরেন, একজন বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী-অধিকারকর্মী, যাকে তিনি মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণে বেঁচে থাকার কৃতিত্ব দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক বৃহত্তম পোশাক ক্রেতা। বছরে ২৩ শতাংশেরও বেশি পতন সত্ত্বেও, বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে দেশটি ৫.৭৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বাংলাদেশি শ্রমিক নেতা এবং তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে ব্লিঙ্কেনের সুনির্দিষ্ট উল্লেখ ছাড়াও, বাংলাদেশ মিশন স্মারকলিপির ‘রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার সম্পর্কে বর্ণনা পুরোদস্তুর রাজনীতি ও কূটনীতিতে ঠাসা।

২০২১ সালে ডেমোক্রেটিক বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে, ওয়াশিংটন বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের বিষয় প্রচারে আরও সোচ্চার হয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলো উল্লেখ করে র‌্যাব এবং এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে, যুক্তরাষ্ট্রও সরকারকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ক্রমাগত তাগিদ দিয়ে আসছে। এ বছরের ঘোষণা—সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের। মানবাধিকার, নির্বাচন ইস্যু তাজা রেখে এখন ইস্যু বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি লিখিত চিঠিতে সতর্ক করা হয়েছে যে, স্মারকলিপিটি বাংলাদেশের জন্য একটি ‘লাল সংকেত’।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। গত অর্থবছরে মোট রপ্তানি প্রায় ৯.৭৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। শ্রমিক-গার্মেন্টসের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক থাক না থাক, কিসিঞ্জারের মৃত্যু আর হাসের ঘটনায় যোগসূত্র না থাক; যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে পেয়ে বসেছে—এটি মূল কথা। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস বা একজন কল্পনা আক্তারকে দেখছে, এর চেয়ে বাজে অবস্থা আছে দেশে-দেশে। বিশেষ করে আফ্রিকান দেশগুলোতে শ্রম অধিকার আলোচনায়ই আসে না। ভিয়েতনামে শ্রমিক সংগঠন আছে মাত্র একটি। সেটিও ভিয়েতনাম সরকারের নিয়ন্ত্রণে। যুক্তরাষ্ট্র এমন আরও কিছু দেশের সঙ্গেও বাণিজ্য করে, যেগুলোতে গণতন্ত্র নেই। শ্রম অধিকার বিষয়ও নয়। বরং চলছে একদলীয় শাসন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেদিকে যাচ্ছে না। চোখের বিশেষ চাহনি তাদের বাংলাদেশের দিকে। জাতিসংঘের ভূমিকাও তেমন ব্যতিক্রম নয়। আসন্ন নির্বাচনে তারা কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কিছু মানবাধিকার সংগঠন তো রয়েছেই। একাত্তরে নিক্সন, ব্লিঙ্কেন, হাসদের চোখও সেদিকে যায়নি।